মোঃ আনোয়ার হোসেন নিজস্ব প্রতিনিধি।
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর সার্কেলে কর্মরত পুলিশের এএসআই মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (বিপি- ৮৫০৫০৯৭৯৪৪) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানায় কর্মরত নারী পুলিশ কনস্টেবল মোছাঃ নাজিরা আক্তার (বিপি- ৯৭১৮২২৫৮৮৫) এর সাথে পরকীয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগী নারী হলেন জামালপুর জেলার সদর থানার জালালের পাড়া এলাকার মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে মোছাঃ তাসলিমা পারভীন (৩৬) এর সাথে প্রায় ১৮ বছর পূর্বে ইসলামি শরা শরীয়ত মোতাবেক এএসআই মোঃ নিজাম উদ্দিনের বিবাহ হয়। উনাদের ঘর সংসার করাকালে ০১ কন্যা নুসরাত জাহান (১৪) ও ০১ পুত্র মোঃ তাওহিদ ইসলাম প্রান্ত (০৯) জন্মগ্রহন করে। পরকীয়ার জড়িয়ে পড়ে পুলিশের এই এএসআই স্ত্রী সন্তানদের ভরণ পোষণ প্রদান করে না। বর্তমানে ভুক্তভোগী নারী তার সন্তানদের নিয়ে উনার পিতার বাড়ীতে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আইজিপি বরাবর দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এএসআই নিজাম গত ২০১৭ সালে নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থানায় যোগদান করিয়া থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ব-পরিবার নিয়ে একত্রে বসবাস করত। একপর্যায়ে বিবাদী উক্ত থানায় নারী কনস্টেবলের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে লিপ্ত হয়। ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে সংশোধন করার অনেক চেষ্টা করলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বরাবরে অভিযোগ দায়ের করে এবং যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অপরাধে এএসআই নিজামের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অভিযূক্ত এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের নোটিশে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী নারী উনার অফিসে যায়। তখন পুলিশের এই কর্মকর্তা সৌরভ নামের এক ছেলেকে ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দী লিখতে নিয়ে যেতে বলে। সৌরভ অভিযূক্ত পুলিশকে বিভাগীয় শাস্তি থেকে রক্ষা করার জন্য মনগড়া জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করে ভুক্তভোগী নারীর ভগ্নিপতি আলাল উদ্দিনকে স্বাক্ষর দিতে বলে। এসময় জবানবন্দীর কাগজে স্বাক্ষর দিতে রাজি না হওয়ায় সারাদিন সৌরভ আলাল উদ্দিনকে আটকে রেখে হুমকী প্রদান করে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেয়। ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সুপারকে জানালেও উনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। উনি ন্যায় বিচার দাবি করেন।
বিভাগীয় মামলার স্বাক্ষী আলা উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসে আমাকে ভয়ভীতি হুমকী দিয়ে জবানবন্দীর কাগজে সৌরভ স্বাক্ষর নিয়েছে।
বিভাগীয় মামলার জবানবন্দী গ্রহণ সংক্রান্তে সৌরভ বলেন, বিভাগীয় মামলার স্বাক্ষী ও অভিযূক্ত ব্যক্তির জেরার জন্য নোটিশে তাসলিমা ও আলা উদ্দিন আসছিল। পিন্ট করার পর জবানবন্দীর কাগজে ভুল থাকায় পুনরায় পিন্ট করে স্বাক্ষীকে স্বাক্ষর দিতে বললে উনি স্বাক্ষর দিতে রাজি হয় নি। পরে অনেক বোঝানোর পর স্বাক্ষর দিয়েছে।
নারী পুলিশ নাজিয়া আক্তার আক্তার বলেন, এএসআই নিজামের সাথে কোন সম্পর্ক নাই। এক ইউনিটে চাকরী করেছিলাম। এসপি স্যারের কথায় এএসআই নিজামকে ফোন দিলে রিসিভ না করায় মেসেজ দিয়ে কথা বলেছি।
অভিযূক্ত সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশের এএসআই নিজাম উদ্দিন জানান, উনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে এবং সিনিয়র অফিসাররা উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।উনি এবিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার সামসুল আলম জানান, বিভাগীয় মামলার স্বাক্ষীকে আটকে রেখে জবানবন্দী জোর পূর্বক গ্রহণ করেছে কিনা উনি এবিষয়ে কিছু জানেন না। ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে উনি যথাযথ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।