মোঃ আনোয়ার হোসেন
বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন গাজীপুর মহানগরীর ৩৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম দুলাল। চাঁদাবাজি, কর ফাঁকিসহ ফৌজদারী বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সাবেক এই কাউন্সিলর ও তার পরিবার।
সাবেক এই কাউন্সিলর দুলাল গাছার মরহুম মঙ্গল মিয়া ছেলে। প্রায় ৩০ বছর আগে সাবেক এই কাউন্সিলর ও তার বড় ভাই বাচ্চু মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকায় মুদির দোকান ছিল। আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গাজীপুর ২ আসনের সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেলের অনুসারী হয়ে গার্মেন্টসসহ বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়ে এখন পলাতক।
দুলাল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে শুল্ক কর ফাকি দেওয়ার অভিযোগ পুরনো। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়নি এনবিআর। অভিযোগ আছে, ভবন নির্মাণে অনিয়মের।
দুলালের পুত্র সাব্বির আহমেদ রাজ। গাজীপুর মহানগরীর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ তাঁকে চেনে ‘রাজ’ নামে। বয়স ৩২। এ বয়সেই মাদক বাণিজ্য, দখল বাণিজ্য, সন্ত্রাস, ডিশ-ইন্টারনেট বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর নাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সাব্বির বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেফতারও হয়েছিল।
তাঁর রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীও। আর তার বড় ভাই সাদ্দাম হোসেন যুবলীগ নেতা হওয়ায় বেপরোয়া তাদের নিজস্ব বাহিনী। দুই ভাইয়ের নামে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। সাদ্দাম একটি সমিতি রয়েছে। চড়া সুদে ঋণ দিয়ে থাকে।
সাবেক এই কাউন্সিলরের বড় ভাই বাচ্চু মিয়ার রয়েছে দুই ছেলে। বড় ছেলে রিপন, ছোট ছেলে বিপ্লব তাদেরও রয়েছে বিপুল অর্থ সম্পদ। সমিতি থেকে ঋণ দিয়ে জোর করে বাড়ী ঘর দখল করার অভিযোগ রয়েছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারগাছ এলাকার এক ব্যক্তি জানান, সাবেক এই কাউন্সিলরের ভাইয়ের ছেলে বিপ্লবের নিকট থেকে অনুমান ২ বছর আগে কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করিলেও জোর করে উনার বাড়ীঘর লিখে নিয়েছেন। সাবেক এই কাউন্সিলরের ছেলে, ভাতিজা ও তাদের ক্যাডার বাহিনী এলাকায় মাদক ব্যবসা থেকে শুরু সকল অপরাধের সাথে জড়িত। এরা এলাকার আতংক। কেউ বাড়ীঘর নির্মাণ করলে তাদের কাছ থেকে চড়া দামে ইট, বালি, সিমেন্ট কিনতে হয়। তাদের অনুমতি ছাড়া এলাকায় কেউ বাড়ীঘর নির্মাণ করতে পারে। এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগসহ সকল কিছু ৫ আগস্টের পূর্বে তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
এবিষয়ে জানতে সাইফুল ইসলাম দুলাল ও তার ছেলে সাদ্দামের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে তাদের ফোন রিসিভ করে নি।
এবিষয়ে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী মোহাম্মদ রাশেদ জানান, সাবেক কাউন্সিলর দুলাল ও তার বড় ছেলে সাদ্দাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে খুনের ঘটনায় রুজু হওয়া মামলায় এজাহার নামীয় আসামী। তাদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।