স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেন
খেয়াল খুশিমতো স্কুলে এসে হাজিরা খাতায় সই করে চলে যান সহকারী শিক্ষক মিরাজ গাজী। অন্য শিক্ষকেরাও ক্লাস নেন নিজেদের মর্জিমতো। শিক্ষার্থীরা যখন খুশি আসে, আবার চলেও যায়। এই অবস্থা গাজীপুর মহানগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের খালিসাবর্থা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
জানা গেছে, কাগজে-কলমে বিদ্যালয়ে শিক্ষককের সংখ্যা চারজন। তবে কেউ কেউ নিয়মিত স্কুলে আসেন না। এ কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা আর আড্ডা মেরে বাড়ি যায়। স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১২টায়। ফলে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। অনেকেই পড়ছে ঝরে। শিক্ষক মিরাজ গাজী স্থানীয় সাংসাদ জাহিদ আহসান রাসেলের অনুসারী ও সক্রিয়ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, এ ধরনের অভিযোগ তাদের জানা নেই। তবে তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন তারা।
গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কক্ষগুলোতে ৮ টি করে বেঞ্চ আছে তবে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী অনুপস্থিত । যদিও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৪ জন। ওই সময় বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। বিদ্যালয় টিতে শিক্ষকদের উপস্থিতি শতভাগ দেখানো হলেও শিক্ষকরা কর্মস্থলে না গিয়ে মাস শেষে বেতন নেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অনুপস্থিত শিক্ষক মিরাজ গাজী গাজীপুরের চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে ৩৫০/২৩ নং সিআর মামলার আসামী। উনি আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গিয়েছেন। গত ৪ ডিসেম্বর মিরাজ গাজী আদালতে হাজিরা দিতে গেলেও বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় উনার স্বাক্ষর রয়েছে।
স্থানীয় যুবক রবিন স্কুলের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, স্কুল চলছে, শিক্ষকও আছেন। কিন্তু নিয়মিত পাঠদান করা হয় না। সহকারী শিক্ষক মিরাজ গাজী নিয়মিত আসেন না। উনার বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা আছে।
এবিষয়ে জানতে অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক মিরাজের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও উনার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোরশেদ আলম জানান, অনুপস্থিত শিক্ষক মিরাজ অসুস্থতার কথা বলে স্কুলে আসেননি। মিরাজের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে উনি কিছু জানেন না।
গাজীপুর জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ ভূইয়া জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অনুপস্থিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।