নিজস্ব প্রতিনিধি
গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও গাজীপুরের পূবাইল থানা পুলিশের অসাধু নীতিহীন কার্যকলাপে কোন রুপ পরিবর্তন আসেনি। গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) পূবাইল থানার এএসআই মোঃ জুয়েল মিয়া সঙ্গীয় কনস্টেবল ৭১০ ফরহাদ ২৪২ নং জিডি মূলে থানা এলাকায় অভিযানে যায়। পরের দিন (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ০২:৩০ ঘটিকার সময় মেঘডুবি কলের বাজার এলাকার মোঃ তাইজুল ইসলামের বাড়ীতে তল্লাশী করে। এসময় উনার ছেলে রাসেল(২৮) কে মাদক দ্রব্য ইয়াবা সেবন রত অবস্থায় আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের এএসআই জুয়েল গাজীপুর মেট্রোপলিটন অধ্যাদেশের ৭৮ ধারায় ননএফআইআর ৫৩নং প্রসিকিউশন মূলে আদালতে গ্রেফতারকৃত রাসেলকে কোর্টে চালান দেয়। এঘটনার সাথে ননএফআইআর প্রসিকিউশন প্রতিবেদনে গরমিল রয়েছে। পুলিশ রাসেলকে তার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করলেও প্রতিবেদনে “মেঘডুবি কলের বাজারের জনৈক মাসুমের দোকানের সামনে রাসেল হৈই হুল্লা ও চিল্লা চিল্লি করে জনসাধারণের বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপরাধে ৭৮ ধারায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে” মর্মে উল্লেখ করেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আসামীকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া রাসেলের পরিবারের কাছ হতে উৎকোচের বিনিময়ে থানা থেকে কৌশলে না ছেড়ে মাদক কারবারি কে মাদক মামলা না দিয়ে এবং কোন আলামত জব্দ না করে আদালতে প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দাখিলের কারণ সকল থানায় সিসিটিভি ফুটেজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এজন্য পুলিশ দায় এড়াতে আসামীদের না ছেড়ে নন-এফআইআর প্রসিকিউশন প্রতিবেদন দিয়ে আদালতে চালান দিলে জরিমানা দিলেই আদালত আসামীকে মুক্তি দিয়ে থাকে। এর ফলে এলাকায় কারবারীরা মাদক ব্যবসা করতে আরো উৎসাহিত হবে। মাদকের সঙ্গে জড়িতদের আইন বহির্ভূত নন-এফআইআর প্রসিকিউশন দেওয়া বন্ধ করার দাবি স্থানীয়দের। রাসেল মাদক বিক্রি ও সেবনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পুরানো। পুলিশ আটক করেও কৌশলে মুক্তি পাওয়ায় জনমনে পুলিশের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে জানতে গ্রেফতার হওয়া রাসেলের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সে জানায়, পূবাইল থানার এএসআই জুয়েল তাকে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ উনার ঘর থেকে ১লাখ টাকা নিয়েছিল। আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর উক্ত টাকা থেকে পুলিশ কিছু খরচ পাতি রেখে বাকিটা ফেরত প্রদান করেন।
এঘটনার বিষয়ে পূবাইল থানার এএসআই জুয়েলের কাছে জানতে চাইলে উনি তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে।
পুলিশ আসামীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে কিনা এবিষয়ে জানতে পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আমিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উনি জানান, রাসেলকে মাদক সেবন করা সংক্রান্তে গ্রেফতার করার সময় তল্লাশী করে যে টাকা পাওয়া গেছে জামিনের পর ভিডিও ধারণ করে আসামীসহ তার আত্মীয় স্বজনদের সামনে মুচলেকা নিয়ে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।