মোঃ আনোয়ার হোসেন স্টাফ রিপোর্টার
মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ আতোয়ার রহমান ও মোঃ আলী রেজার আদালতের জাল জালিয়াতিপূর্ণ জামিনের আদেশ তৈরি করার অপরাধে ২ প্রতারককে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী হলেন-রংপুর জেলার পীরগাছা থানার পশ্চিম পারুল এলাকার মোঃ শাহ আলমের ছেলে নাজিম উদ্দিন। অপরদিকে আটককৃত আসামীরা হল- গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার সিতারামপুর এলাকার খাইরুজ্জামানের ছেলে মোঃ মাহমুদুর রহমান এবং শরীয়তপুর জেলার পালং থানার চর কুমারপুর এলাকার মোঃ হোসেন শেখের ছেলে মোঃ আমিনুল ইসলাম, সে আইনজীবীর ক্লার্ক।
জানা যায়, ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ নাজমুল ওরফে রিপন ঢাকার আশুলিয়া থানার একটি হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ কাশিমপুর জেল হাজতে আটক আছে। সেই সুযোগে আসামীরা ভুক্তভোগীর ভাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১ মাসের মধ্যে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে জামিন করানোর প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস প্রদান করে দীর্ঘ কথাবার্তার ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে। তৎপর আসামীরা গত ১৮ ফেব্রুয়ারী সুগ্রীম কোর্ট বারের তরুন চত্তরে ডেকে ভুক্তভোগীকে (Criminal Misc. Case No. 63455 of 2025 Tender No. 97241 of 2025) একটি জাল জালিয়াতিপূর্ণ সৃজনকৃত জামিনের আদেশের কাগজ প্রদান করে আরো ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পুনরায় আসামী বের হইতে আরো ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।
সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, সুপ্রীম কোর্ট চত্তরে ভুক্তভোগী ও আসামীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আইনজীবী এবি.এম ইব্রাহিম খলিল, জসিম, রেজাউল করিম রেজা, আলামিন সহ একাধিক আইনজীবী উপস্থিত হয়ে এই জামিনের আদেশটি দেখে জাল জালিয়াতি পূর্ণ সৃজনকৃত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতের নজরে আনলে বিচারকগন আদেশটি দেখে সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ প্রদান করেন। রেজিষ্ট্রার জেনারেল ১ ও ২নং আসামীকে জিজ্ঞেস করলে এঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং আটককৃত আসামীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আটককৃত মাহমুদুর রহমানের আসল নাম মাহমুদ হাসান। তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি ধর্ষণ মামলা এবং ম্যাজিষ্ট্রেটের স্বাক্ষর জালিয়াতি করার অপরাধে গাছা থানার একটি মামলার আসামী। সে পেশাদার অপরাধী। এই প্রতারকের প্রতারণার শিকার হয়েছে অনেকেই। তার ১ম স্ত্রী সাবিনা, ২য় স্ত্রী তাছলিমা, ৩য় স্ত্রী নদী @ বৃষ্টি, ৪র্থ স্ত্রী তামান্না। সে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
এ সংক্রান্তে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) খালিদ হোসেন জানান, প্রতারকদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পেশাদার অপরাধী। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আসামীদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।