নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ জামাল আহমেদ
গার্মেন্টস শ্রমিকদের শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে স্থানীয় পর্যায়ে সংলাপের প্রেস রিলিজ।
অদ্য ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রোজ বুধবার, গাজীপুর জেলার ওয়ার্ড-৬-এর ৭০ নং কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা টেরে ডেস হোমসের সহযোগিতায়, গার্সিয়া ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় এবং ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক) কর্তৃক বাস্তবায়িত “কমিউনিটি বেইজড চাইল্ড প্রোটেকশন মেকানিজম ফর দ্য চিলড্রেন অব গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ইন বাংলাদেশ (সিবিসিপিএম)” প্রকল্পের আওতায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে স্থানীয় পর্যায়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সহকারী সচিব নেজামুল হক এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ আজহারুল ইসলাম। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টারের উপপরিচালক রিপন কুমার সাহা, শিশু-বান্ধব পুলিশ অফিসার মোহাম্মদ রোকন মিয়া এবং ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার ভিডিপি সদস্য নুসরাত জাহান।
সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, বিজিএমইএ প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, নিয়োগকর্তা, চাইল্ড প্রোটেকশন ফোরামের সদস্য, কমিউনিটি বেইজড চাইল্ড প্রোটেকশন কমিটির সদস্য এবং চাইল্ড প্রোটেকশন মনিটরিং কমিটির সদস্যসহ মোট ৪০ জন অংশীজন।
সংলাপটি পরিচালনা করেন সিবিসিপিএম প্রকল্পের প্রকল্প অফিসার গাজী মুইনুল হক। সংলাপের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টারের উপপরিচালক রিপন কুমার সাহা।
গাজীপুর সংরক্ষিত আসন ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড সচিব সাইদুর রহমান শিশুদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
শিশু-বান্ধব পুলিশ অফিসার মোহাম্মদ রোকন মিয়া ও আনসার ভিডিপি সদস্য নুসরাত জাহান আশ্বস্ত করেন যে, শিশুদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন এবং ভবিষ্যতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।
বিজিএমইএ প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ঘন এলাকাগুলোতে বাবা-মা দুজনেই কাজ করার কারণে শিশুরা ঝুঁকির মধ্যে থাকে। তিনি ডে-কেয়ার সেন্টার ও ইসিডি সেন্টার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
চাইল্ড প্রোটেকশন কার্যক্রমের অগ্রগতি
প্রকল্প অফিসার গাজী মুইনুল হক প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপন করে জানান যে, চাইল্ড প্রোটেকশন ফোরামের সদস্যরা এখন পর্যন্ত ৬৬টি শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করেছেন। সমস্যাগুলোর ধরন নিম্নরূপ:
শিশু নির্যাতন ,শিশুশ্রম – বাল্য বিবাহ ,মাদকাসক্তি – উত্ত্যক্তকরণ (ইভ টিজিং) – অবহেলা – অনলাইন হয়রানি – যৌন হয়রানি ,অন্যদিকে, চাইল্ড প্রোটেকশন মনিটরিং কমিটির সদস্যরা ৭০টি শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করেছেন
প্রকল্পের আওতায় ৪৫৬ জন শিশুকে ইসিডি (প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়ন কেন্দ্র) থেকে এবং ৪৭ জন শিশুকে স্থানীয় এলাকা থেকে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিশেষ অতিথির ৭০ নং কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিশুরা আগামীর ভবিষ্যৎ, তাদের জন্য সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা আমাদের সবার দায়িত্ব
প্রধান অতিথি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য কালে বলেন মোঃ আজহারুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র এনজিও নয়, সকল নাগরিকের নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে পারলে আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারবো।
সংলাপের সমাপ্তি ঘোষণাস ভাপতি নেজামুল হক প্রজেক্ট এলাকায় ময়লার ভাগার ও সিগারেট ফ্যাক্টরি থেকে ছড়িয়ে পড়া তামাকের গন্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সকল অংশীজনকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংলাপে
র সমাপ্তি ঘোষণা করেন।